কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট বা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থাগুলোর তুলনায় জ্বালানি সাশ্রয়ী। অর্থাৎ সমপরিমাণ জ্বালানি ব্যবহার করে এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র তুলনামূলকভাবে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।
পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মানুযায়ী শক্তির বিনাশ নেই আবার উৎপাদনও করা সম্ভব নয় (আপেক্ষিক তত্ত্বের E=mc2 প্রসঙ্গটা থাক)। শক্তির রূপান্তর করা যায় কেবল। কিন্তু এই রূপান্তরটা শতভাগ দক্ষ নয়। যেমন আমরা বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে বাতি জ্বালাতে গেলে বাতিটা গরম হয়ে কিছুটা শক্তির অপচয় হয়।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপারটাও তাই। জ্বালানি পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গলে পুরোটা বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করা সম্ভব হয় না। প্রচলিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে প্রায় দুই তৃতীয়াংশই অপচয় হয়। তাপ শক্তি হিসেবে এই আপচয়টা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে পরিবেশে প্রচুর তাপ নির্গত হয়।
কম্বাইন্ড সাইকেল, নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে এখানে দু’টি সাইকেল থাকে। দু’টি থার্মোডাইনামিক সাইকেল বা তাপগতীয় চক্র ব্যবহারের মাধ্যমে অপচয়টা কমানো হয়। সহজভাষায় দু’টি তাপ ইঞ্জিন কাজ করে। ভাল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দক্ষতা ৬০% পর্যন্ত হতে পারে।
প্রথমে জ্বালানি পুড়িয়ে টার্বাইন ঘোরানো হয়। এই টার্বাইন একটি জেনারেটরের সাথে যুক্ত থাকে যেটি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। টার্বাইন থেকে নির্গত উত্তপ্ত গ্যাস বয়লার থেকে পানির বাষ্প তৈরি করে। এই বাষ্প আবার একটি বাষ্প চালিত টার্বাইনকে ঘোরায়। এই টার্বাইন প্রথম জেনারেটরে আরও শক্তি যোগ করতে পারে। কিংবা আলাদা একটি জেনারেটরকেও ঘোরাতে পারে।
এধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তুলনামূলকভাবে কম তাপ নির্গত হয়। ফলে জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতিটাও কম হয়।