নদী মোহনায় তলদেশ জমে থাকা পলির ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ দেখে ৬২০ মিলিয়ন বছর আগে দিনের দৈর্ঘ্য ২১ ঘণ্টা ছিল বলে মনে করা হয়। কেবল ২১ ঘণ্টার দিন নয়, বিজ্ঞানীরা মনে করেন শুরুর দিকে পৃথিবীতে হয়ত ৬ ঘণ্টার দিনও ছিল। পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হয়ে আসার এ ধারা এখনো চালু আছে। পারমাণবিক ঘড়ির হিসেব অনুযায়ী আধুনিককালে দিনের দৈর্ঘ্য এক শতাব্দী আগের তুলনায় ১.৭ মিলিসেকেন্ড দীর্ঘ।
সাড়ে চারশো কোটি বছরের পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য কমে আসার প্রধান কারণ চাঁদের আকর্ষণ। ধারণা করা হয় মঙ্গলগ্রহের মত বিশাল কোন কিছু আঘাতে পৃথিবীর একটি অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে চাঁদ সৃষ্টি হয়। সে সময় পৃথিবী আরও দ্রুত ঘুরতে শুরু করে। দিনের দৈর্ঘ্য ২-৩ ঘণ্টায় পৌঁছায়। আর চাঁদ পৃথিবীকে ৫ ঘণ্টায় প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে।
পৃথিবীর গতি ধীর হয়ে আসার কারণ:
- পৃথিবীর জোয়ার ভাটায় সূর্যের ভূমিকা থাকলেও চাঁদের ভূমিকাই বেশি। জোয়ারের ফলে যে ঘর্ষণ বল কাজ করে তা পৃথিবীর গতির বিপরীতে কাজ করে।
- অনেক সময় বড় ধরনের ভূমিকম্পও দিনের দৈর্ঘ্যকে সামান্য মাত্রায় প্রভাবিত করে। কারণ টেকটনিক প্লেটের সঞ্চালনের ফলে জড়তার ভ্রামক পরিবর্তিত হয় যা ঘূর্ণনকে প্রভাবিত করে।
ভবিষ্যতে কি হবে?
চাঁদ ও পৃথিবীর এ খেলা শেষ হতে শত শত কোটি বছর লেগে যাবে। তাত্ত্বিক হিসেবে চাঁদ আরও দূরে সরে যাবে। পৃথিবীর ঘূর্ণনে ৪৫ দিন লাগবে সে সময় চান্দ্রমাসের দৈর্ঘ্যও ৪৫ দিন হবে। তবে ততদিন পর্যন্ত যদি মানবসভ্যতা টিকেও থাকে সম্ভবত এর চেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হবে সূর্য। কারণ তখন রেড জায়ান্টে পরিণত হবে আমাদের সূর্য।