যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের মাথার খুলি বাঁচাতে সৈন্যরা বহু আগে থেকেই লোহার হেলমেট ব্যবহার করে চলেছে। আধুনিক যুগে সুউচ্চ ভবন, বিশাল জাহাজ কিংবা বড় বড় বাঁধ বা সেতুর মত প্রকল্পগুলোতে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের মাথায় আঘাতের ঝুঁকি কমাতে হেলমেটের মত কিছু একটা জরুরি হয়ে পড়ে। প্রথম দিকে শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য চামড়ার হ্যাট ব্যবহৃত হয়েছে। ইস্পাতের তৈরি একটি হেলমেট নিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বাড়ি ফিরেছিলেন ই ডি বুলার্ড। সৈন্যদের জন্য তৈরি ইস্পাতের হেলমেটের ধারনাটিকে শ্রমিকদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ব্যবহারের বিষয়টি তার মাথায়ই প্রথম আসে। পরবর্তী সময়ে গোল্ডেন গেট ব্রিজ এবং হুভার ড্যামের মত বড় বড় প্রকল্পে এসব হেলমেট ব্যবহৃত হয়েছে। দিনে দিনে নিরাপত্তা হেলমেটেও পরিবর্তন এসেছে। লোহার বদলে ফাইবার গ্লাস, মজবুত প্লাস্টিক ইত্যাদির ব্যবহার শুরু হয়েছে।
হেলমেটের বিভিন্ন রঙের অর্থ
নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে আমরা বিভিন্ন রঙের হেলমেটের ব্যবহার দেখতে পাই। হেলমেটের রঙের ধরন থেকে বুঝে নেয়া যেতে পারে কে কি করছে আর জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত সঠিক লোকটিকে ডেকে আনা যেতে পারে।
সাদা
সাধারণত ম্যানেজার, শ্রমিকদের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি, প্রকৌশলী এবং স্থপতিরা সাদা রঙের হেলমেট ব্যবহার করেন। |
|
বাদামী
ঝালাই বা উচ্চ তাপমাত্রা ব্যবহার করতে হয় এমন শ্রমিকরা ব্যবহার করেন। |
|
সবুজ
নিরাপত্তা পরিদর্শক, নবাগত শ্রমিক এবং কর্মীরা ব্যবহার করেন। |
|
হলুদ
সাধারণ শ্রমিক এবং মাটি সরানোর কাজ করছে এমন শ্রমিকরা ব্যবহার করেন। |
|
নীল
কাঠমিস্ত্রি, ইলেক্ট্রিশিয়ান কিংবা অন্যান্য কারিগরি কাজ করছেন এমন লোকেরা ব্যবহার করেন। |
|
কমলা
সড়কের কাজে নিয়োজিত কর্মীরা ব্যবহার করেন। |
|
ধূসর
পরিদর্শকদের জন্য। |
|
লাল
অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের জন্য। |
|
গোলাপি
কেউ যথাযথ হেলমেট ব্যবহার করতে ভুলে গেলে সাময়িকভাবে গোলাপি হেলমেট দেয়া হয়। |
তবে নির্মাণ কাজের নিরাপত্তা হেলমেট বা হার্ড হ্যাটের রঙের এই নিয়ম বা কালার কোড বিশ্বজনীন নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমনকি বিভিন্ন কোম্পানি কিছুটা ভিন্ন ধরনের নিয়ম অনুসরণ করে থাকে। কাজেই হেলমেট দেখে চিনে নেয়া গেলেও নিশ্চিত হতে হলে সংশ্লিষ্ট নির্মাণ প্রকল্পে কি নিয়ম অনুসৃত হচ্ছে তা জেনে নিতে হবে।