ব্লগ স্পট
ব্লগিং এর অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সাইট হচ্ছে ব্লগ স্পট (www.blogspot.com ) এটি মূলত গুগলেরই একটি সেবা। ব্লগ লিখতে গেলে প্রথমে একটি একাউন্ট খুলতে হবে। অবশ্য জিমেইল একাউন্ট থাকলে সেটির ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই ব্লগ তৈরি করা যাবে। ব্লগ তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে ঠিকানা বা ডোমেন নির্বাচন করতে হবে। ঠিকানা হবে: www.username.blogspot.com । আবার চাইলে নিজস্ব ডোমেনের (রেজিস্ট্রেশন করা) জন্যও ব্লগ স্পটকে হোস্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
ডোমেন নির্বাচনের পর ভাষা নির্বাচন করতে হবে। ব্লগ স্পটে ইংরেজী বা বাংলা যেকোন ভাষাতেই লেখা সম্ভব।
এরপর টেমপ্লেট নির্বাচন করতে হবে। ওয়েব ডিজাইনে কোন জ্ঞান ছাড়াই কেবল ড্র্যাগ ও ড্রপের মাধ্যমে টেমপ্লেটটিকেও নিজের পছন্দমত সাজিয়ে নেয়া যায় ব্লগ স্পটে। অন্য সাইটের আরএসএস ফিড সংযোজন করা যায়, এমনকি গুগল এডসেন্সের বিজ্ঞাপন সংযোজন করা যায়। তবে বিজ্ঞাপন সংযোজন করতে চাইলে অবশ্যই এডসেন্সের নীতিমালা মেনে লিখতে হবে। আর গুগল এডসেন্স এখন পর্যন্ত বাংলা ব্লগের জন্য বিজ্ঞাপন সমর্থন করছে না।
ওয়ার্ডপ্রেস
ওয়ার্ডপ্রেসের (www.wordpress.com) ইংরেজী ব্লগের পাশাপাশি বাংলা ব্লগ (www.bn.wordpress.com) আছে্।নাম ই-মেইল ঠিকানা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেস বাংলা বা ইংরেজী ব্লগ লেখা শুরু করা যেতে পারে।
বাংলা ব্লগ সাইটগুলো
বেশকিছু বাংলা কমিউনিটি ব্লগ সাইট চালু হয়েছে। এগুলোয় একই নিয়মে ই-মেইল ঠিকানার মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে হয়। কোন ব্লগ পোস্ট করার সময় ব্লগার চাইলে তা একই সাথে হোম পেজে দিতে পারেন। তবে হোম পেজে সর্বশেষ ব্লগ প্রদর্শিত হয়, তাই একটি সময় পর সেটি আর হোম পেজে থাকে না। আবার কিছু ব্লগ সইট কেবল নিরাপদ ব্লগারের লেখাই হোম পেজে প্রদর্শন করে। ব্লগারের লেখার ধরন বুঝে তাকে নিরাপদ বা অনিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ছদ্মনামে লেখা
অনেক ব্লগারই ছদ্মনামে লিখতে পছন্দ করেন। ব্লগ সাইটগুলোও এতে আপত্তি করে না। কাজেই নিজের নাম ছাড়া অন্য নামে একাউন্ট খোলা মোটেই অবৈধ নয়।
ব্লগ দুনিয়ার আদবকেতা
মোটামুটিভাবে সব ব্লগ সাইটেরই একটি নীতিমালা থাকে। মূল কথাটা অনেকটা এরকম, কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা যাবে না, সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কথা লেখা যাবে না। তবে বড় ব্লগ সাইটগুলো মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে। স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারিতা মেনে নেয়া হয় না।
ব্লগের প্রভাব
আজকের দুনিয়ায় সাংবাদিকতা ও তথ্য প্রবাহের চিত্রটাই বদলে দিয়েছে ব্লগিং। মূল ধারার সংবাদমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাস্তবতায় কিছু তথ্য অপ্রকাশিত রেখে দেয়। কিন্তু ব্লগে ব্লগাররা অবলীলায় তা লিখছে, মতামত দিচ্ছে, জনমত তৈরির চেষ্টা করছে। আরব বসন্তের ক্ষেত্রেও ব্লগ আর সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর অনেক প্রভাব ছিল। সাধারণ মানুষ এখন তাই ব্লগিং করতে গিয়ে নিজেকে আর অসহায় মনে করছে না।
অবশ্য ব্লগে স্বাধীনতার সুযোগ থাকায় অনেকে তার অপব্যববহারও করছে। আবার অনেকসময় দু:শাসনের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে অনেক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। দেশে বিদেশে ব্লগ সাইট বন্ধ করে দেবার ঘটনাও ঘটেছে।
কেবল সাধারণ মানুষই নয়, প্রতিষ্ঠিত লেখকগণও মানুষের কাছে আরও ভালোভাবে পৌঁছানোর জন্য ব্লগ লিখছেন। কারণ ব্লগে মানুষে প্রতিক্রিয়া পাওয়াটা সহজ আর সম্পাদকের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না।
নিজস্ব ডোমেনে ব্লগ
অধিকাংশ ব্লগারই ফ্রি একাউন্ট খুলে ব্লগিং শুরু করেন এবং একটি পর্যায়ে এসে নিজের একটি ডোমেন নেবার কথা ভাবেন। ১০ থেকে ১২ ডলারে ডোমেন রেজিস্ট্রেশন করা যায়। আর হোস্টিং এর জন্যও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। অবশ্য কয়েককটি ওয়েবসাইট সীমিতভাবে ফ্রি হোস্টিং সুবিধাও দেয়। গুগলের ব্লগ স্পট এমন একটি সাইট। তবে এখানে ফাইল আপলোড সুবিধা নেই। এসব সুবিধা পেতে ফ্রি হোস্টিং সার্ভিস দেয় এমন সাইটের সাহায্য নিতে হবে। আর কিছুটা পয়সা খরচ করে হোস্টিং করতে পারলে সেটা সবচেয়ে ভালো।
ডিজাইন
নিজে ডিজাইন না করেও ওয়ার্ডপ্রেস (www.wordpress.org) কিংবা জুমলা (www.joomla.org ) ইত্যাদির সাহায্য নিয়ে ব্লগিং শুরু করা যেতে পারে।
ব্লগ লিখে আয়
ব্লগাররা সাধারণত নিজের বক্তব্য তুলে ধরতেই লেখেন। তবে ব্লগ লিখে টাকা পাওয়ার সুযোগও আছে। এজন্য মূলত ইরেজীতে লিখতে হবে, আর কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে লিখতে হবে। এডসেন্স বা এরকম অনলাইন বিজ্ঞাপন সংস্থার বিজ্ঞাপন থেকে তখন আয় করা সম্ভব হবে। আর ব্লগটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠলে বিজ্ঞাপনদাতারা সরাসরি বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠবেন। পশ্চিমে এমন কিছু সফল ব্লগের উদাহরণ রয়েছে।
লেখাটি অন্য একটি সাইটের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। সম্প্রতি সেখান থেকে সরিয়ে নেয়ায় এখানে প্রকাশ করা হল।