তরলের ঘনত্ব নির্ণায়ক যন্ত্রের নাম হাইড্রোমিটার। আর্কিমিডিসের নীতির ওপর ভিত্তি করে এটি কাজ করে। তরলে নিমজ্জিত কঠিন বস্তু একটি ঊর্ধ্বমুখী বল অনুভব করে যেটিকে প্লবতা বলে। এই প্লবতা কঠিন বস্তু দ্বারা অপসারিত তরলের ওজনের সমান। তাই তরল পাতলা হলে ঊর্ধ্বমুখী বল কম হয় আর তরল ঘন হলে ঊর্ধ্বমুখী বল বেশি হয়। তখন বস্তু খুব বেশি ডোবে না। সমুদ্রের পানিতে বেশি মাত্রায় লবণ থাকায় সেখানে ভেসে থাকা কিছুটা হলেও সহজ।
হাইড্রোমিটারে একটি বদ্ধ কাঁচনল থাকে। এর এক প্রান্তে পারদ বা সীসা জাতীয় বস্তু রেখে সেটিকে ভারী করা হয়। কিন্তু এতটা ভারী নয় যে পুরোপুরি ডুবে যাবে। ফলে বদ্ধ কাঁচনলটি খাড়াভাবে ভেসে থাকে। কতটা ভেসে থাকবে সেটি নির্ভর করছে তরলের ঘনত্বের ওপর। তরল খুব বেশি ঘন না হলে অনেকখানি ডুবে যাবে।
কাঁচনলের গায়ে আগেই দাগ কেটে রাখা হয়। নদী বা সমুদ্রে দূষণ নির্ণয়ের অংশ হিসেব হাইড্রোমিটারের মাধ্যমে ঘনত্ব মাপা হয়। এছাড়া ব্যাটারির এসিডের ঘনত্ব নির্ণয়েও হাইড্রোমিটার ব্যবহার করা হয়।
- দুধের ঘনত্ব মাপার জন্য যেসব হাইড্রোমিটারের দাগ কেটে রাখা হয় সেগুলোকে ল্যাকটোমিটার বলে।
- তরলে চিনির মাত্রা মাপতে যেসব হাইড্রোমিটারের দাগ কেটে রাখা হয় সেগুলোকে স্যাকারোমিটার বলে।
- স্পিরিটে অ্যালকোহলের মাত্রা মাপতে যেসব হাইড্রোমিটারের দাগ কেটে রাখা হয় সেগুলোকে অ্যালকোহোলোমিটার বলে।