এ প্রশ্ন শত শত বছর ধরে বিজ্ঞানীদের ভাবিয়েছে। আলো কণা এবং তরঙ্গ, দুটো তথ্যই সঠিক। অনেকটা অন্ধের হাতি দেখার মত। হাতি পাথরের মত, কুলার মত, গাছের মত, সাপের মত, সবই সত্য। আলো আসলে কি তা নির্ভর করছে আপনি কিভাবে দেখছেন তার ওপর।
বিজ্ঞানী নিউটন আলোকে কণা হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন, এর ভিত্তিতে আলোর প্রতিসরণ এবং প্রতিফলনের মত ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া গেলেও ব্যতিচার, অপবর্তন, পোলারাইজেশনের মত ঘটনা ব্যাখ্যা করা যায়নি। তাই তরঙ্গ তত্ত্ব নিয়ে আসেন হাইগেন। হাইগেনের তরঙ্গ তত্ত্ব ব্যতিচার, অপবর্তন, পোলারাইজেশন যেমন ব্যাখ্যা করতে পেরেছিল তেমন প্রতিফলন এবং প্রতিসরণের মত ঘটনাও ব্যাখ্যা করতে পেরেছিল। বিজ্ঞানীরা বুঝে গেলেন আলো আসলে তরঙ্গ। কিন্তু সমস্যা তৈরি করলেন আইনস্টাইন।
আইনস্টাইন দেখালেন আলোক তড়িৎ ক্রিয়া বা ফটোইলেকট্রিক ইফেক্ট আলোর তরঙ্গ তত্ত্বের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় না। তিনি বললেন আলো আসলে ফোটন কণিকার প্রবাহ।
এখন আলোর কণা এবং তরঙ্গ দু’টো রূপই সত্য বলে ধরা হয়। আলোর এ দ্বৈত চরিত্রকে দৈনন্দিন জীবনের কোন ঘটনার সাথে তুলনা করা যায় না। যেসব পাঠকের কাছে আলোর দ্বৈত চরিত্রের বিষয়টি গোলমেলে লাগছে তারা এই ভেবে সান্ত্বনা পেতে পারেন যে আইনস্টাইনও তাদের দলে আছেন; মৃত্যুর কিছু সময় আগে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, “৫০ বছরের গভীর অনুসন্ধানও আমাকে আলোক কণিকা (Light quanta)আসলে কি –সে প্রশ্নের উত্তরের কাছাকাছি নিতে পারেনি”।