উপন্যাসের পাশাপাশি অনেক চলচ্চিত্রেও জলদস্যুদের একটি চোখ এক ধরনের পট্টি দিয়ে ঢাকা দেখানো হয়। এটি কিন্তু আঘাতগ্রস্ত চোখ ঢেকে রাখার জন্য নয়।
জলদস্যুদের আই প্যাচ বা চোখের পট্টি ব্যবহারের কারণ
জলদস্যুরা ভালো চোখই ঢেকে রাখে বিশেষ সুবিধা নেয়ার জন্য। আমাদের চোখে কতটা আলো প্রবেশ করবে সেটি নির্ধারিত হয় পিউপিল বা তারারন্ধ্রের মাধ্যমে। চারপাশের আলো বেশি হলে চোখের ভেতর আলো প্রবেশের মাত্রা কমিয়ে দিতে তারারন্ধ্র ছোট হয়ে আসে। আবার অল্প আলোয় দেখতে চোখের ভেতর আলো প্রবেশ বাড়াতে তারারন্ধ্র বড় হয়ে যায়। এই ছোট বড় হওয়ার কাজটিতে কিছুটা সময় লেগে যায় বলে অন্ধকার থেকে হঠাৎ করে উজ্জ্বল আলোয় গেলে দেখতে অসুবিধা হয় আর উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত এলাকা থেকে অন্ধকার ঘরে প্রবেশ করলে আমরা কিছু দেখতে পাই না।
জাহাজে আক্রমণ চালানোর সময় জলদস্যুদের খুব দ্রুত ডেকের ওপরে এবং ডেকে নিচে যাতায়াত করতে হয়। এ অবস্থায় চোখকে মানিয়ে দেয়ার সময় দেয়া সম্ভব নয়। এজন্য এক চোখ পট্টি দিয়ে ঢেকে রেখে অন্ধকারে দেখার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়।
সত্যিই কি আই প্যাচ বা চোখের পট্টি ব্যবহৃত হয়েছে?
মজার ব্যাপার হচ্ছে জলদস্যুরা তাদের চোখ আঘাতগ্রস্ত না হওয়া সত্ত্বেও এক চোখ পট্টি বা আই প্যাচ দিয়ে ঢেকে রেখেছে এরকম কোন ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়নি। কেবল সাহিত্যে এবং তা থেকে তৈরি চলচ্চিত্রে এর প্রয়োগ দেখা যায়। এক চোখ পট্টি দিয়ে ঢেকে রেখে কোন সুবিধা হয় কিনা সেটি দেখতে পরীক্ষাও চালানো হয়েছিল আর তাতে দেখা গিয়েছিল এক চোখ ঢেকে রাখলে সত্যিই অন্ধকারে দ্রুত কাজ করা যায়।
বিমানের পাইলটরা এক চোখ বন্ধ রাখতেন
রাতে বিমান চালনার সময় আগে পাইলটদের বলা হত উজ্জ্বল আলোর দিকে তাকানোর সময় যেন তারা এক চোখ বন্ধ রাখেন। পাইলটের চোখ যাতে সব সময় অল্প আলোয় দেখার জন্য তৈরি থাকে সেজন্যই এ পরামর্শ দেয়া হত। অবশ্য এখন প্রযুক্তির উন্নতির ফলে রাতে দেখার অনেক উপকরণ তৈরি হয়েছে আর তাই আগের মত উজ্জ্বল আলোর দিকে তাকানোর সময় পাইলটদের আর এক চোখ বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয় না।
চিকিৎসায়
সত্যি সত্যি চোখের আঘাত ঢেকে রাখার পাশাপাশি অনেক সময় চিকিৎসার অংশ হিসেবে একটি চোখের দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটাতে আই প্যাচ বা পট্টি ব্যবহার করতে হয়।