৩৫৬ দিনের বছরে একদিন যোগ করা হয় আর বছরটিকে বলা হয় লিপ ইয়ার, দিনটিকে বলা হয় লিপ ডে। এরকম লিপ সেকেন্ডও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা যখন প্রয়োজন মনে করেন এক সেকেন্ড যোগ করে দেন এটিই লিপ সেকেন্ড।
লিপ ইয়ার বা লিপ ডে কবে হবে সেটি আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে কিন্তু লিপ সেকেন্ড কবে হবে তা বলা যায় না। লিপ সেকেন্ড মানে স্থায়ীভাবে দিন দীর্ঘ করা নয়, নির্ধারিত দিনে কেবল একবার কোঅর্ডিনেটেড ইউনিভার্সাল টাইমে (UTC) এক সেকেন্ড যোগ করা হয়।
লিপ সেকেন্ড কেন
পৃথিবীর দু’ধরনের গতি আছে: আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি। সূর্যের চারদিকে ঘুরে আসতে পৃথিবীর এক বছর সময় লাগে এটি বার্ষিক গতি আর পৃথিবী নিজ অক্ষের ওপর ঘুরতে ২৪ ঘণ্টা সময় নেয় এটি আহ্নিক গতি।
আহ্নিক গতির যে ২৪ ঘণ্টা সময়কাল তাকে সেকেন্ড রূপান্তর করলে দাঁড়ায়: ২৪×৬০×৬০ = ৮৬,৪০০ সেকেন্ড।
আধুনিক কালে নিখুঁতভাবে সময় গণনার জন্য বিশ্বজুড়ে যে পারমাণবিক ঘড়ি ব্যবহার করা হয় তা এতটাই সূক্ষ্ম যে মহাবিশ্বের পুরো মেয়াদকালে এক সেকেন্ডও পিছিয়ে পড়বে না বলে মনে করা হয়।
অন্যদিকে পৃথিবীর ঘূর্ণনকে ভিত্তি করে সময় পরিমাপ করলে দেখা যায় পারমাণবিক ঘড়ি কিছুটা এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ পৃথিবীর ঘূর্ণন দিন দিন ধীর হয়ে পড়ছে। ফলে পৃথিবীর একটি দিন ৮৬,৪০০ সেকেন্ডের চেয়ে দীর্ঘ হচ্ছে। মোটামুটিভাবে ০.০০১ সেকেন্ড বেশি সময় লাগছে। চাঁদের আকর্ষণ এবং জোয়ার-ভাটাসহ বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হয়ে আসছে। কিন্তু এই ধীর হওয়ার হারটি নিয়মিত নয়। তাই কখন লিপ সেকেন্ড যোগ করতে হবে সেটি আগে থেকে অনুমান করা কঠিন।
১৯৭২ সালে শুরু হওয়ার পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৭ বার লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছে। তাত্ত্বিক হিসেবে ঋণাত্মক লিপ সেকেন্ডও সম্ভব কিন্তু আজ পর্যন্ত তার প্রয়োজন হয়নি।