
শব্দগত অর্থ
অতিক্ষুদ্র কিছু বোঝাতে ‘মাইক্রো’ উপসর্গটি (Prefix)ব্যবহার করা হয়। কাজেই মাইক্রোগ্রাভিটি হল এমন অবস্থা যেখানে পৃথিবীর আকর্ষণ বলের প্রভাব খুব কম। আর জিরো গ্রাভিটি হচ্ছে এমন অবস্থা বা জায়গা যেখানে আকর্ষণ বল একেবারেই কাজ করছে না।
‘জিরো-গ্রাভিটি’ শব্দগুচ্ছ যে কারণে সঠিক নয়
মহাকাশে কোন কিছুর আকর্ষণ বল কাজ করে না এ ধারণা একেবারেই সঠিক নয়। পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ২০০-২৫০ মাইল উচ্চতায় থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র পৃথিবীকে আবর্তন করে। এই উচ্চতায় পৃথিবীর আকর্ষণ বল কিছুটা কম অনুভূত হয় ঠিকই কিন্তু তা কোনভাবেই শূন্য নয়।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের উচ্চতায় আপনার ওজন শূন্য নয়

জিরো গ্রাভিটি নেই
মহাকাশের যেখানেই আপনি যান না কেন, কোন না কোন গ্রহ-নক্ষত্রের আকর্ষণ সেখানে থাকবেই। তাই জিরো গ্রাভিটি কোথাও পাওয়া যায় না। কিন্তু বহুদূরে থাকা গ্রহ-নক্ষত্রের আকর্ষণ বল অতি নগণ্য হয়ে পড়ে সেটাকেই বলা হয় মাইক্রোগ্রাভিটি।
পৃথিবী তার আকর্ষণ বলের মাধ্যমেই চাঁদকে কক্ষপথে ধরে রেখেছে, একইভাবে সূর্যও তার আকর্ষণ বলের মাধ্যমে পৃথিবীকে কক্ষপথে ধরে রেখেছে। এই আকর্ষণ বল না থাকলে পৃথিবী সূর্যকে ছেড়ে বহুদূরে চলে যেত।
ওজনহীনতা

মহাকাশ কেন্দ্রও একই রকম ঘটনা ঘটে। মহাকাশ কেন্দ্রকে একটি পড়ন্ত বস্তুর সাথে তুলনা করা যায়। ধরুন একটি কামান থেকে গুলি ছোঁড়া হল। এক্ষেত্রে কামানের গোলা হচ্ছ পড়ন্ত বস্তু, এটি একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে গিয়ে মাটিতে পড়বে। একটি বাঁকানো গতিপথ অতিক্রম করে কামানের গোলা এগিয়ে যায়। এই বাঁক যদি পৃথিবীর বাঁকের মতই হয় তাহলে কিন্তু কামানের গোলা কখনই মাটিতে পড়বে না। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকবে। এই কামানের গোলা এটি একটি পড়ন্ত বস্তু।
মহাকাশ কেন্দ্রের ব্যাপারটাও এরকম। ঘণ্টায় ১৭,৫০০ মাইল বেগে ছুটে চলা মহাকাশ কেন্দ্র একটি পড়ন্ত বস্তু, কিন্তু এর গতিপথ পৃথিবীর বাঁকের মতই। ফলে এটি কখনো মাটি এসে পড়ে না। আর একটি পড়ন্ত বস্তুর ভেতরে থাকা মহাকাশচারীরাও নিজেদের ওজনহীন অনুভব করেন। মহাকাশ কেন্দ্রে যে অভিকর্ষজ ত্বরণ একেবারেই নেই তা নয়, এখানে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান 1×10-6g । পৃথিবীর বুকে ৭০০ পাউন্ড ওজনের যন্ত্রপাতিও নভোচারীরা মহাকাশ কেন্দ্রের ওজনহীন পরিবেশে অনায়াসে তুলে ফেলতে পারেন।
পৃথিবীতে ওজনহীনতা












