বেকিং সোডা শিরোনামের লেখাটিতে ইতোমধ্যেই আলোচনা করেছি বেকিং সোডার মূল উপাদান সোডিয়াম হাইড্রোজেনকার্বনেট বা সোডিয়াম বাইকার্বনেট কিভাবে কেক বা পাউরুটির মত খাবারকে ফোলাতে সাহায্য করে। বেকিং পাউডারও একইভাবে কাজ করে। তবে এখানে সোডিয়াম হাইড্রোজেনকার্বনেটের সাথে বিক্রিয়া করার জন্য শুষ্ক এসিড (dry acid) মিশিয়ে রাখা হয়। এগুলো এমনিতে পরস্পরের সাথে খুব একটা বিক্রিয়া করে না। কিন্তু তরলের উপস্থিতিতে (যেমন পানি) বিক্রিয়া করতে শুরু করে। শুষ্ক এসিড হিসেবে ক্রিম অব টার্টার (cream of tartar) কিংবা সোডিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সালফেট (sodium aluminum sulfate) থাকে।
সোডিয়াম বাইকার্বনেট (NaHCO3) এবং ক্রিম অব টার্টারের (KHC4H4O6) বিক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইডের (CO2) উৎপত্তি:
NaHCO3 + KHC4H4O6 → KNaC4H4O6 + H2O + CO2
সোডিয়াম বাইকার্বনেট (NaHCO3) এবং সোডিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সালফেটের বিক্রিয়ায় (NaAl(SO4)2) বিক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইডের (CO2) উৎপত্তি:
3 NaHCO3 + NaAl(SO4)2 → Al(OH)3 + 2 Na2SO4 + 3 CO2
তবে দুধ, পানি এসব মেশালেই যে বেকিং পাউডার কার্বন ডাই অক্সাইডের উৎপাদন শুরু করে দেবে তা নয়। কিছু বেকিং পাউডার আছে যেগুলো উত্তাপ না পেলে তেমন বিক্রিয়া করে না। উপকরণগুলো মেশানোর পর ওভেনে দিতে হয়।
কাজেই রাসায়নিক বিক্রিয়ার ধরনে মিল থাকলেও বেকিং সোডা আর বেকিং পাউডার এক নয়।
বেকিং সোডা আর বেকিং পাউডার এর পার্থক্য:
বেকিং সোডায় কোন এসিডীয় উপাদান থাকে না, আলাদাভাবে যোগ করে নিতে হয় আর বেকিং পাউডারে এসিডীয় উপাদান মিশ্রিত অবস্থায় থাকে যেটি তরলের উপস্থিতিতে (এবং অনেক ক্ষেত্রে উত্তাপ আবশ্যক) রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে খাবার ফোলানের জন্য কার্বন ডাই অক্সাইডের যোগান দেয়।
তবে খাবারকে ফুলিয়ে নিতে বা বেকিং এর জন্য যেকোনো একটি ব্যবহার করলেই চলে। বেকিং পাউডার ড্রাই এসিড মিশ্রিত অবস্থায় থাকে তাই এটি বেশি পরিমাণে ব্যবহার করতে হয়। সাধারণত তিন চা চামচ বেকিং পাউডারকে এক চা চামচ বেকিং সোডার সমতুল্য ধরে নেয়া হয়।