ইংরিদ বারিমান (২৯ আগস্ট ১৯১৫ – ২৯ আগস্ট ১৯৮২) ছিলেন একজন সুইডিশ অভিনেত্রী। ইউরোপ এবং আমেরিকায় টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯৯৯ সালে ইংরিদ বারিমানকে ক্লাসিক হলিউড সিনেমায় সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কিংবদন্তী অভিনেত্রীর তালিকায় চার নম্বরে স্থান দেয় আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট। তাঁর নামের সুইডিশ উচ্চারণ বারিমান হলেও ইংরেজিতে বার্গম্যান উচ্চারণ করা হয়।
ইংরিদ বারিমানের বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে: ইন্টারমেটসো- এ লাভ স্টোরি (১৯৩৯), কাসাব্লাঙ্কা (১৯৪২), ফর হুম টি বেল টোলস(১৯৪৩), গ্যাসলাইট(১৯৪৪) এবং জোয়ান অব আর্ক(১৯৪৮)। সাতবার একাডেমী পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন আর তিনবার পুরস্কার জেতেন।
ছেলেবেলা
ইংরিদ বারিমানের জন্ম হয়েছিল সুইডেনের স্টকহোমে। বাবা ছিলেন সুইডিশ আর মা ছিলেন জার্মান। তার ছেলেবেলা সুইডেনে কাটলেও প্রতিবছর গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতেন জার্মানিতে। সে সূত্রে জার্মান ভাষায় স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলা রপ্ত করে ফেলেন। মাত্র দুই বছর বয়সে মাকে হারিয়েছিলেন। আর বাবাকে হারিয়েছিলেন তেরো বছর বয়সে। বাবা চেয়েছিলেন মেয়ে অপেরা শিল্পী হবে। এজন্য তিন বছর ধরে উচ্চারণ ও কণ্ঠস্বরের অনুশীলন করিয়েছিলেন মেয়েকে। কিন্তু ইংরিদ বারিমান সবসময়ই চেয়েছিলেন অভিনেত্রী হতে। কখনো কখনো মায়ের পোশাক পরে বাবার শূন্য স্টুডিওর মঞ্চে একা একা অভিনয় করতেন। বারিমানের প্রতিটি জন্মদিনেই ধার করা ক্যামেরায় ছবি তুলে রাখতেন বাবা।
পরবর্তী সময়ে সুইডেনের রয়েল ড্রামাটিক থিয়েটার স্কুলের বৃত্তি পেয়ে সেখানে পড়াশোনার জন্য যান। সেখানকার নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর পড়াশোনা না হলে কোন নাটকে অভিনয়ের সুযোগ দেয়া হত না। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই একটি নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান। আর থিয়েটার স্কুলে প্রথম গ্রীষ্মের ছুটিতে সুইডেনের একটি সিনেমায় কাজ করার সুযোগও পেয়ে যান। একারণে এক বছরের মধ্যেই থিয়েটার স্কুল ছেড়ে দেন তিনি।
ইংরিদ বারিমানের হলিউড ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ১৯৩৯ সালে ইন্টারমেটসো: এ লাভ স্টোরি সিনেমার মাধ্যমে। এটি ছিল ইংরিদ বারিমান অভিনীত ১৯৩৬ সালের সিনেমা ইন্টারমেটসো এর রিমেক। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এই আনকোরা অভিনেত্রীকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন পরিচালক ডেভিড ও. সেলজনিক। আমেরিকার সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশেষ ধারনা ছিল না এই অভিনেত্রীর। ইংরেজি তখনো জানতেন না। হলিউডের এই ছবি যে সফল হবে সে আশাও খুব একটা করেননি। তাই স্বামী ও এক বছর বয়সী মেয়েকে দেশে রেখে আসেন। কিন্তু এ ছবি হঠাৎ করেই তাকে তারকা বানিয়ে দেয় আর হলিউড ক্যারিয়ারের শুরুটাও এখান থেকে।
আরও দেখুন: ইংরিদ বারিমান এর বিখ্যাত উক্তিগুলো
আরও জীবনী: